
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বেড়েছে শীতের প্রকোপ। শীতে প্রকৃতিতে দিনব্যাপী বিরাজমান বৈরী আবহাওয়া ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টিতে একটি প্রকট সমস্যা ধারণ করেছে।
শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হতদরিদ্র মানুষ গুলোর দৈনন্দিন জীবনে নতুন সংগ্রাম শুরু হয়েছে। প্রচণ্ড হাড় কাঁপানো শীতে কাহিল হয়ে পরেছে নিম্ন আয়ের পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুররা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৯ শতাংশ।
বিভিন্ন সড়কে হাটবাজার রেলস্টেশনে, বাসস্ট্যান্ড, পার্ক ও ফুটপাতে বসবাসরত অগণিত মানুষ শীতকালীন সমস্যা ও অনাহারে জীবনযাপন করতে দেখা গেছে।
এই অঞ্চলে শীতের তীব্রতা দিনের চেয়ে রাতে সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। শীতে সাধারণত ঠাণ্ডা, বৃষ্টি বা কুয়াশার মধ্যে ছিন্নমূল মানুষদের কোনো নিরাপদ আশ্রয় না থাকায় তাদের শারীরিক অবস্থায় প্রভাব পরেছে।
নিম্নমানের জীবনযাপনের কারণে গরম কাপড়ের অভাব, নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে অনেকে রোগাক্রান্ত হন। শীতের কারণে সর্দি, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, এবং অন্যান্য শীতজনিত রোগ ছিন্নমূল মানুষদের উপর মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করেছে।
শীতের এই বৈরী আবহাওয়া সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে মানুষের দৈনন্দিন জীবিকায়। সারাদিন সূর্যের দেখা মিলছে না, প্রকৃতিতে চলতে থাকা শীতের তীব্র দাপটে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের দৈনন্দিন আয় স্থবির হয়ে পরেছে।
ফলে পরিবার গুলোতে পর্যাপ্ত খাবারের সংকট তৈরি হয়েছে। একদিকে শীতের তীব্রতার কষ্ট, অন্যদিকে হতদরিদ্রের পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাব সবমিলিয়ে তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
এই শীতে এমন পর্যায়ে অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা অভাবে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। ফলে তীব্র ঠান্ডা এবং খাদ্যের অভাবে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে।
বর্তমানে শীতের তীব্রতায় ছিন্নমূল মানুষদের জন্য সরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ, আশ্রয় কেন্দ্র ও গরম কাপড়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
পাশাপাশি সরকারি হাসপাতাল গুলোতেও শীতজনিত রোগের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
স্থানীয় কমিউনিটি এবং সমাজকর্মীরা যদি একত্রিত হয়ে ছিন্নমূল মানুষের জন্য আশ্রয়, গরম কাপড় এবং খাবার সরবরাহ করে, তবে ছিন্নমূল মানুষদের জীবনযাত্রার মান কিছুটা সহনীয় হতে পারে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষননাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, দিনের বেশিরভাগ সময় রৌদ্র থাকলেও কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা দেখা যায়।
এর মূল কারণ হচ্ছে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি। এই জলীয় বাষ্প গুলি বায়ুমন্ডলে নির্দিষ্ট কোন স্তরে জমাট বেঁধে বরফে পরিণত হয়।
অতঃপর উক্ত জমাট বাধা বরফটি উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাসের প্রভাবে জমাট বাধা বরফ গুলো গলে যায়। তারই ফলশ্রুতিতে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়।
All rights reserved © 2024
Leave a Reply