জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে।
বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং এতে জড়িত ছিলেন জোবায়েদের প্রাইভেট শিক্ষার্থী বর্ষা ও তার প্রেমিক মাহীর রহমান।
তাদের মধ্যে ৯ বছরের সম্পর্ক থাকলেও একসময় বর্ষা জোবায়েদের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন।
কিছুদিন পর আবার মত পাল্টে বর্ষা জানান যে, তিনি জোবায়েদকে আর পছন্দ করেন না। এরপর মাহীর ও বর্ষা মিলে জোবায়েদকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মাহীর তার দুই বন্ধুকে নিয়ে অংশ নেয় এবং তারা নতুন দুটি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা হত্যায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, পরে মাহীরের সঙ্গে মুখোমুখি করা হলে তারা পুরো ঘটনা স্বীকার করে নেয়।
জানা যায়, তারা গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে আসছিল। এখন পর্যন্ত বর্ষাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জোবায়েদ ছিলেন জবি’র পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য। তিনি পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন, যিনি হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত।
গত ১৯ অক্টোবর বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই ছাত্রীর বাসায় খুন হন জোবায়েদ। বাসার তিনতলার সিঁড়িতে তার রক্তাক্ত মরদেহ পাওয়া যায়।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে, বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ ও তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে।
পরে পুলিশ ওই ছাত্রী বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় এবং ঘটনার রাতেই তাকে পুলিশ প্রটোকলে বাসা থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নিহত জোবায়েদের মরদেহ ময়নাতদন্তের পর গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে এবং বাকি জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।